দীর্ঘ ২৪ বছর পর অবশেষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধ’রা পড়লেন আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী। চাঞ্চল্যকর চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী হ'ত্যা মাম'লার প্রধান আ'সামি তিনি।
সংস্থাটি বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কারণসহ সোহেল হ'ত্যায় সংশ্লি'ষ্টতার বি'ষয়ে তথ্য দিয়েছেন আশীষ।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব' মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব' সদর দ'প্ত রের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি বলেন, ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাত ৩টার দিকে বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের নিচে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে গু'লি করে হ'ত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার বড় ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাদী হয়ে গু'লশান থা'নায় মাম'লা করেন। যার মাম'লা নম্বর ৫৯। ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ৯ জনের বিরু'দ্ধে ডিবি পুলিশ আ'দালতে চার্জশিট দাখিল করে। ২০০১ সালে ৩০ নভেম্বর মাম'লায় অ'ভিযোগ গঠন করা হয়। পরে মাম'লা বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
মাম'লা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ওই মাম'লার ১নং আ'সামি আদনান সিদ্দিকী দুই বছর পর হাইকোর্টে রিট করেন। রিটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২০০৪ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মাম'লার কার্যক্রম স্থগিত করে রুলসহ আদেশ দেন। পরে হাইকোর্ট বেঞ্চ ২০১৫ সালের ৫ আগস্ট পুনরায় আরেকটি রায় দেন। এ রায়ে আগের জারি করা রুলটি খারিজ করে দেওয়া হয়। প্র'ত্যাহার করা হয় হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ।
সর্বশেষ চলতি বছরের গত ২৮ মা'র্চ আ'দালত অনুপস্থিতির কারণে ছয় পলাতক আ'সামিকে গ্রে'ফতারে পরোয়ানা জারি করেন। এরও এক মাস পর পরোয়ানার কপি সংগ্রহ করে র্যাব'।
র্যাব'ের এই কর্মক'র্তা জানান, গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে গত রাতে র্যাব' সদর দ'প্ত রের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব'-১০ এর যৌ'থ অ'ভিযানে রাজধানীর গু'লশান থেকে চার্জশিটভুক্ত পলাতক আ'সামি আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরীকে (৬৩) গ্রে'ফতার করা হয়।
র্যাব' জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে আশীষ জানান, ১৯৯৬ সালে বনানীর আবেদীন টাওয়ারে আশীষ ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের যৌ'থ মালিকানায় ট্রাম্পস ক্লাব প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ক্লাবে সন্ধ্যা থেকে শুরু করে ভোররাত পর্যন্ত নানান অ'সামাজিক কার্যকলাপ 'হতো। একপর্যায়ে ক্লাবটি আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন ও গ্যাং' লিডারদের একটি বিশেষ আখড়ায় পরিণত হয়। সেখানে সবচেয়ে বেশি যাতায়াত ছিল আজিজ মোহাম্ম'দ ভাইয়ের। তিনি মূলত ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চক্রগু'লোর সঙ্গে মিটিং করতে এই ক্লাবে নিয়মিত যাতায়াত করতেন। সেই সুবাদে বান্টি ও আশীষের সঙ্গে আজিজ মোহাম্ম'দের সখ্য তৈরি হয়। এই তিনজন ক্লাব ব্যবহার করে ঢাকার আন্ডারওয়ার্ল্ডের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন।
র্যাব'ের ভাষ্যমতে, বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে চলত অনৈ'তিক কার্যক্রম ও উচ্চশব্দে গান-বাজনা। এর প্রতিবাদ করেছিলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী। এ নিয়ে আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন আজিজ মোহাম্ম'দ ভাইয়ের সঙ্গেও বাগবিতণ্ডা হয়। প্রকাশ্যে অ’পমান করায় সোহেল চৌধুরীকে উচিত শিক্ষা দিতে ওই ক্লাবের স্বত্বাধিকারী আশিষ রায় চৌধুরী ওরফে বোতল চৌধুরী ও আসাদুল ইসলাম ওরফে বান্টি ইসলামের যৌ'থ পরিকল্পনায় হ'ত্যা করা হয় সোহেল চৌধুরীকে। হ'ত্যার দায়িত্ব নেন আজিজ মোহাম্ম'দ ভাই। তিনি তখনকার শীর্ষ স'ন্ত্রাসী ইমনকে দায়িত্ব দেন। ইমনসহ তার গ্যাং' ১৯৯৮ সালের ২৪ জুলাই বনানী ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে গু'লি করে হ'ত্যা করে নায়ক সোহেল চৌধুরীকে।
গ্রে'ফতার আশিষ রায় জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব'কে বলেন, তিনি ২০০৫ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত একটি এয়ারলাইন্সের ডিরেক্টর (অ’পারেশন্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১০ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত তিনি আরেকটি এয়ারলাইন্সের গু'রুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন। ২০১৩ থেকে এখন পর্যন্ত তিনি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হিসেবে কর্মর'ত।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানীর ক্লাব ট্রামসের নিচে চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে গু'লি করে হ'ত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার ভাই তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী গু'লশান থা'নায় মাম'লা করেন। গোয়েন্দা পুলিশ ১৯৯৯ সালের ৩০ জুলাই ৯ জনের বিরু'দ্ধে অ'ভিযোগপত্র দেয়।
এ মাম'লায় কারা'গারে আছেন তারিক সাঈদ মামুন ও হারুন অর রশীদ। আর পলাতক রয়েছেন আ'সামি আজিজ মোহাম্ম'দ ভাই, সানজিদুল হাসান ইমন ও সেলিম খান।
Leave a Reply